Subscribe Us

header ads

এক নজরে মুন্সীগঞ্জ (বিক্রমপুর) জেলাঃ

এক নজরে মুন্সীগঞ্জ (বিক্রমপুর) জেলাঃ
ইতিহাস,ঐতিহ্য আর বহু কীর্তিমান মনীষীর স্মৃতিধন্য মুন্সিগঞ্জ জেলা। এ জেলার প্রাচীন নিদর্শন সমূহের সাথে জড়িয়ে রয়েছে হাজারো গৌরব গাঁথা, সুখ-দু:খের নানা উপাখ্যান।সংগীত, নাটক, নৃত্য, সাহিত্য, আবৃত্তি-সংস্কৃতির সকল শাখায় সমৃদ্ধ এই মুন্সিগঞ্জ।এ জেলা সুপ্রাচীন চন্দ্ররাজাদের তাম্রশাসনের অঞ্জলি থেকে শুরু করে পাল, সেন, মোঘল, বার ভূঁইয়াদের কীর্তিতে সমুজ্জ্বল হয়ে একটি স্বাধীন বঙ্গ রাজ্যের রাজধানী বিক্রমপুরের কীর্তিময় অংশ। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সাথে জড়িত রয়েছে মুন্সিগঞ্জ বাসীর অবিস্মরনীয় অবদান। বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতিকে গতিশীল রাখতে এ জেলা পালন করছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
বিক্রমপুর পরগনা বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা থেকে ১২ মাইল দক্ষিণে অবস্থিত। বর্তমানে এ অঞ্চলটি মুন্সীগঞ্জ জেলার অর্ন্তগত। বিক্রমপুর বাংলার একটি ঐতিহাসিক এলাকা। সুপ্রাচীন কাল থেকেই এই অঞ্চল তার বৌদ্ধ জ্ঞান চর্চার জন্য এবং পরবর্তীতে সাংস্কৃতিক প্রভাবের জন্য সুপরিচিত। ধারণা করা হয়, বৈদিক যুগ থেকে ভাওয়াল ও সোনারগাঁও রাজধানী হিসেবে আবির্ভূত হবার আগ পর্যন্ত এটিই ছিল বাংলার প্রাচীনতম রাজধানী। বিক্রমপুর ছিল রাজা বিক্রমাদিত্যের রাজধানী। এই এলাকায় বাংলার বহু কীর্তিমান ব্যক্তির জন্ম হয়েছে। এখানকার কৃতী সন্তানের মধ্যে রয়েছেন অতীশ দীপঙ্কর, জগদীশ চন্দ্র বসু, ব্রজেন দাস, সত্যেন সেন প্রমুখ।
বিক্রমপুর নামের উৎপত্তিঃ
ধারণা করা হয়, বিক্রমপুর নামটির উৎপত্তি বিক্রমাদিত্য থেকে। বিক্রমাদিত্য হিন্দু পুরানের একজন রাজা ছিলেন। তবে বেশ কয়েকজন শাসক যেমনঃ চন্দ্রগুপ্ত–২, ধর্মপাল, সম্রাট হেমু প্রমুখ বিক্রমাদিত্য পদবিটি গ্রহণ করেছিলেন।[১] তাই এটি পরিষ্কার নয় কার নামে বিক্রমপুরের নামকরণ করা হয়েছিল। বিক্রমপুর নামের ‘‘বিক্রম’’ অর্থ সাহস বা বীরত্ব এবং ‘‘পুর’’ অর্থ নগর বা এলাকা, যা উপমহাদেশে বিভিন্ন অঞ্চল বা এলাকার নামের শেষাংশ হিসাবে সাধারণতঃ ব্যবহার করা হয়।
মুন্সীগঞ্জ নামকরণঃ
মুন্সিগঞ্জের প্রাচীন নাম ছিল ইদ্রাকপুর। কথিত আছে, মোঘল শাসন আমলে এই ইদ্রাকপুর গ্রামে মুন্সী হায়দার হোসেন নামে একজন ব্যক্তি ছিলেন। তিনি মোঘল শাসকদের দ্বারা ফৌজদার নিযুক্ত হয়েছিলেন। অত্যন্ত সজ্জন ও জনহিতৈষী মুন্সী হায়দার হোসেনের নামে ইদ্রাকপুরের নাম হয় মুন্সীগঞ্জ। কারো কারো মতে জমিদার এনায়েত আলী মুন্সীর নামানুসারে মুন্সিগঞ্জ নামকরন করা হয়েছে।

ভূমির আকৃতিঃ
মুন্সিগঞ্জ জেলা নদীবাহিত সমতল এলাকা। জেলার সকল অঞ্চলের ভিতর দিয়ে নদী প্রবাহিত হয়েছে।মুন্সিগঞ্জের বেশীর ভাগ এলাকা নিম্নভূমি বলে বর্ষার পানিতে অনেক সময় প্লাবিত হয়ে পড়ে। এ জেলার মধ্য দিয়ে পদ্মা, মেঘনা, ধলেশ্বরী ও ইছামতি নদী প্রবাহিত হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে নদী তীরবর্তী এলাকাসমূহ নদী ভাংগনের কবলে পড়ে।
জলবায়ুঃ
মুন্সিগঞ্জের জলবায়ু সমভাবাপন্ন। তবে আর্দ্রতা, বৃষ্ট্রিপাত ও শীতের প্রকোপ বাংলাদেশের অন্যান্য নদীবাহিত এলাকার অনুরূপ। অপেক্ষাকৃত বৃক্ষাদির সংখ্যা বেশি হওয়ায় এ এলাকার আবহাওয়া বসবাসের জন্য আরামদায়ক।
জেলার গুরুত্বপুর্ণ তথ্যাবলীঃ
জেলা প্রতিষ্ঠার তারিখ : ১লা মার্চ ১৯৮৪ সাল
জেলার মোট আয়তন: ৯৫৪.৯৬ বর্গ কিঃ মিঃ
জেলার জনসংখ্যা: ১৫,০২,৪৪৯জন
পুরুষ : ৭,৪৯,৯১৮ জন
মহিলা : ৭,৫২,৫৩১ জন
শিক্ষার হার : ৫৬.১%
মোট উপজেলা : ৬টি
পৌরসভার সংখ্যা : ২টি
ইউনিয়নের সংখ্যা : ৬৭টি
ওয়ার্ড : ৬০৩টি
প্রাথমিক বিদ্যালয় : ৫৩৮টি (সরকারী ৫০৪টি , বেসরকারী রেজিঃকৃত ৩৪টি)
মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা : ৯৯টি (সরকারী ৩টি, বেসরকারী ৮৫টি, বেসরকারী জুনিয়র ১১টি)
মাদ্রাসা : ২৯টি (দাখিল ২২টি, আলিম ৫টি, ফাজিল ১টি, কামিল ১টি)
কলেজ : ১৩টি (সরকারী ৪টি, বেসরকারী ৯টি মোট)
সোর্সঃ ডিসি ওয়েবসাইট
————————^^^^^^^^^^————————
বাংলাদেশের শীর্ষ ধনী ১০ জেলার মধ্যে মুন্সিগঞ্জ দ্বিতীয়
দেশের শীর্ষ ধনী ১০ জেলার মধ্যে মুন্সিগঞ্জ ২য় স্থানে রয়েছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ খানার আয় ও ব্যয় নির্ধারণ জরিপ ২০১৬-তে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
সম্প্রতি এই প্রতিবেদন আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশ করা হয়। সেখানে প্রথমবারের মতো জেলাওয়ারি ধনি-দরিদ্র্য পরিস্থিতি চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
সবচেয়ে ভালো আছেন নারায়ণগঞ্জের মানুষ। এই জেলার প্রতি ১০০ জনে গড়ে ২ দশমিক ৬ জন মানুষ গরিব। বাকিরা সবাই দারিদ্র্যসীমার ওপরে বাস করেন।
দারিদ্র্য কম এমন ১০টি জেলার ৭টিই ঢাকা বিভাগের বাকি ছয়টি জেলার মধ্যে দারিদ্র্যের হার মুন্সিগঞ্জ ৩ দশমিক ১শতাংশ, মাদারীপুর ৩ দশমিক ৭শতাংশ গাজীপুরে ৬দশমিক ৯শতাংশ ফরিদপুরে ৭দশমিক ৭শতাংশ ঢাকায় ১০শতাংশ ও নরসিংদীতে সাড়ে ১০ শতাংশ। সে হিসেবে মুন্সিগঞ্জ রয়েছে ২য় স্থানে।
শীর্ষ ১০ তালিকায় থাকা অন্য তিনটি জেলার মধ্যে দারিদ্র্যের হার ব্রাক্ষনবাড়ীয়া ১০ দশমিক ৩শতাংশ। মৌলভীবাজারে ১১শতাংশ ও সিলেট ১৩ শতাংশ।
বিবিএসের জরিপ অনুযায়ী দেশের সবচেয়ে দারিদ্র্য প্রবণ এলাকা উত্তরবঙ্গ সবচেয়ে বেশী গরিব মানুষ থাকে রংপুর বিভাগে। দারিদ্র্যের হার সবচেয়ে বেশি এমন ১০টি জেলার মধ্যে ৫টিই রংপুর বিভাগে। কুড়িগ্রাম ছাড়া এই তালিকায় আছে রংপুর, দিনাজপুর, গাইবান্ধা ও লালমনিরহাট।
এর মধ্যে দারিদ্র্যের হার দিনাজপুরে ৬৪দশমিক ৩শতাংশ, গাইবান্ধায় ৪৬ দশমিক ৭শতাংশ, রংপুরে ৪৩দশমিক ৮শতাংশ ও লালমনিরহাট ৪২ শতাংশ।
শীর্ষ তালিকায় দেখা গেছে দেশের আরেকটি দারিদ্র্যেপ্রবণ পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবন ও খাগড়াছড়ি জেলা আছে। এই তালিকায় থাকা অন্য তিনটি জেলা হলো জামালপুর কিশোরগঞ্জ ও মাগুরা।
কুড়িগ্রাম জেলার প্রতিটি ১০০ জন আধিবাসীর মধ্য প্রাই ৭১জনই গরিব। তাঁরা নিজেদের পরিবারে সদস্যদের পর্যাপ্ত খাবার কিনতে পারেন না। আবার দৈনন্দিন চাহিদা যেমন স্বাস্থ্য শিক্ষা বস্ত্র এসবেও খরচ করার সুযোগ কম।
কুড়িগ্রাম জেলায় সবচেয়ে বেশি গরিব মানুষ।এই জেলার দারিদ্র্যের হার ৭০ দশমিক ৮শতাংশ। জেলার কোথাও কোথাও দারিদ্র্যের হার ৭৭ দশমিক ছাড়িয়ে গেছে। তবে কোথাও ৬৪ শতাংশের নিচে দারিদ্র্যের হার নেই।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে জরিপটির প্রকল্প পরিচালক দীপঙ্কর রায় বলেন, এবারই প্রথম বারের মতো জেলাওয়ারি দারিদ্র্য পরিস্থিতি কেমন তা তুলে ধরা হয়েছে। আমরা দেখতে চেয়েছি আঞ্চলিক পর্যায়ে দারিদ্র্য বা দারিদ্র্যের পকেট আছে কিনা। দেখা গেছে কিছু অঞ্চল বেশি দরিদ্র।
তিনি আরো জানান এই জরিপে পাওয়া তথ্যের ভিক্তিতে বেশি দরিদ্র অঞ্চলগুলোয় সরকার নীতিসহ বিভিন্ন কর্মসুচি নিতে পারে।খানার আয়ও ব্যয় নির্ধারণ জরিপ ২০১৬ অনুযায়ী গত ছয় বছরে সার্বিক দারিদ্র্যের হার বাড়ে ৩১শতাংশ থেকে কমে ২৪ দশমিক ৩শতাংশ হয়েছে।
অতি দারিদ্র্যের হারও কমেছে। ২০১৬সালে অতি দারিদ্র্যের হাট ছিলো ১২ দশমিক ৯ শতাংশ। বিবিএসের তথ্যমতে বর্তমানে দেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ২০ লাক্ষ। সেই হিসাবে দেশে ৩ কোটি ৯৩ লাক্ষ দরিদ্র মানুষ আছে। হত দরিদ্রের সংখ্যা ২কোটি ৮লাক্ষ।
————————^^^^^^^^^^————————
মুন্সীগঞ্জের উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর নামঃ
ডেস্ক রিপোর্ট: মুন্সীগঞ্জ জেলা বাংলাদেশের সবচেয়ে শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর এলাকা হিসেবে পরিচিতি। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যখন কোন স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়নি, তখনো এ অঞ্চলে মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয় ছিল।
আজ জেনে নিন মুন্সীগঞ্জের উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম:
হাঁসাড়া কে.কে উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৭৯)
গজারিয়া বাতেনিয়া আলিম মাদ্রাসা (১৯৮০)
বজ্রযোগিনী জে.কে উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮৩)
মুন্সিগঞ্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮৫)
লৌহজং পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮৫)
মালখানগর উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮৯)
এ.ভি.জে.এম. সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯২)
ইছাপুরা উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯২)
স্বর্ণগ্রাম আর.এন উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯৮)
আব্দুল্লাপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯৯)
ভাগ্যকুল হরেন্দ্রলাল উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০০)
আউটশাহী রাধা নাথ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০১)
বানারী বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়(১৯০১)
ব্রাহ্মণগাঁও বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০২)
পাইকপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০৪)
রায় বাহাদুর শ্রীনাথ ইনস্টিটিউশন (১৯১৮)
বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৯)
রাড়ীখাল জে.সি বসু ইন্সটিটিউশন ও কলেজ (১৯২১)
গজারিয়া পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৮)
ভবেরচর ওয়াজীর অালী বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩৭)
মাকহাটী জি.সি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫৫)
জসলদিয়া হাই স্কুল (১৯৬৪)
রংমেহার উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৯৭)
কে কে গভঃ ইন্সটিটিঊশন (১৯৪২)
প্রেসিডেন্ট ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ স্কুল এন্ড কলেজ (২০০৮)
গজারিয়া পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়
শ্রীনগর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়
সোনারং পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়
হাজি গনি করিম উচ্চ বিদ্যালয়
টংগিবাড়ি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
সমষপুর উচ্চ বিদ্যালয়
ষোলঘর একে এসকে উচ্চ বিদ্যালয়
জামালদী হাজী সিরাজুল হাই স্কুল
গজারিয়া হোসেন্দী উচ্চ বিদ্যালয়
বেতকা ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়
কাজিরপাগলা এ.টি. ইনস্টিটিউশন
————————^^^^^^^^^^————————
বসন্তে প্রাণবন্ত আড়িয়ল বিল ! বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় কুমড়া এখানেই হয়
মুন্সীগঞ্জ: বসন্তে বদলে গেছে আড়িয়ল বিলের সৌন্দর্য। শীত শেষের বসন্তেও এখন এ বিলজুড়ে হাসছে শাক-সবজির ক্ষেত। রোপন করা ধানের জমির ফাঁকে ফাঁকে জলাধারে মিলছে হরেক প্রজাতির মাছ। ক্ষেতের আইলে আলো ছড়াচ্ছে মিষ্টি কুমড়‍া-লাউ। দল বেঁধে শাক তুলছে কিশোরীর দল। মৌসুমের কিছুটা অবসরে মেলা বসছে বিভিন্ন স্থানে। সবমিলিয়ে তাই বসন্তে অনেক প্রাণবন্ত আড়িয়ল বিলের জীবন-জীবিকা।
ঢাকার দোহার ও নবাবগঞ্জ এবং মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর ও সিরাজদিখান উপজেলায় এই জলাভূমির অবস্থান। তবে বেশির ভাগ অংশ পড়েছে মুন্সীগঞ্জে। মুন্সীগঞ্জের ৭ হাজার ৯৭০ হেক্টর আবাদযোগ্য ভূমি রয়েছে আড়িয়ল বিলে। বছরের সব ঋতুতেই এখানে ফলন হয়। বর্ষায় মাছে ভরা থাকে। এই মাছ পাওয়া যায় মাঠ শুকানোর আগ পর্যন্ত।
শ্যামসিদ্ধি ইউনিয়নের গাদিঘাটা এলাকায় পাইকারী করলা ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আড়িয়ল বিলে প্রচুর করলা হয়। এখান থেকে আমরা মাল কারওয়ানবাজার, যাত্রাবাড়ী, মিরপুর ইত্যাদী এলাকার আড়তে পাঠাই। সেখান থেকে যায় সারা বাংলাদেশে। প্রতিদিন শ’চারেক মণ করলা এখান থেকে বাজারজাত হয়।আড়িয়ল বিলের মেলা। ছবি: আল মামুন
কুমড়ার এবার ফলন ভাল হওয়ায় খুশি স্থানীয় ছালাম মিয়া। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, আড়িয়ল বিলের মিষ্টি কুমড়া সেরা। আমার পাঁচটি ভিটায় এবার ৫/৬ গাড়ি (মাঝারি ট্রাক) কুমড়া হয়েছে। এখানকার একটি কুমড়া সর্বোচ্চ দেড় মণেরও বেশি হয় এবং বিভিন্ন সাইজের হতে পারে। এখান থেকে ভাল লাভ হয়েছে এবার। ষোল আনার মধ্যে চারআনা খরচ আর বারো আনাই লাভ। ফালগুনে প্রতিদিন আড়িয়ল বিলের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে অন্তত ১০ ট্রাক কুমড়া বাজারে যায়। মাঠে এখনও অনেক কুমড়া আছে।
সবুজ ধান ক্ষেতের ফাঁকে ফাঁকে কয়েক হাজার ভিটায় ফলে আরো নানা ফসল। লাউ, কলা, বেগুন ইত্যাদি ফলে এখানে। ক্ষেতের আইলে (দুই ক্ষেতের মাঝে সরু রাস্তা) পাওয়া যায় হেচি শাক, ক্ষুদুইরা শাক ইত্যাদি বিভিন্ন রকমের শাক। এখানকার মানুষের অনেক কিছুই কিনে খেতে হয় না, বিলেই পাওয়া যায়। এখানকার নারী-কিশোরীদের অবসরের সবচেয়ে ভাল বিনোদন দল বেঁধে শাক তোলা। মোট কথা, উৎপাদনশীল আড়িয়ল বিলকে সবাই উপভোগ করে যে যার যার মতো। লাউ নিয়ে নিজের ভিটা থেকে ফেরার সময় আব্দুল বাতেন বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের খাবার নিয়ে আল্লাহর রহমতে চিন্তা করতে হয় না।
শীত জুড়ে শুকিয়ে আসা পুরো বিলের অসংখ্য জলাধারে পাওয়া যায় বিপুল পরিমাণ মাছ। মাছ ধরায় ব্যস্ত সময় পার করছেন অনেকেই। বশির মিয়া বলেন, আমার ভিটার পাশে একটা ডোবা আছে, সেখান থেকে ভাল পরিমাণ মাছ পাই। আত্মীয়-স্বজন নিয়ে খাওয়ার পরেও বিক্রি করা যায়। সব মিলিয়ে ভাল আছি।আড়িয়ল বিলের করল্লা। ছবি: আল মামুন
বসন্তে আড়িয়ল বিলের আশপাশের মানুষের আপাতত কর্মব্যস্ততা তুলনামূলক কম। তাই এখানে বিভিন্ন জায়গায় বসে মেলা। বিভিন্ন জায়গায় আয়োজন করা হয় ওয়াজ মাহফিল। বিল পাড়ের মানুষে সব ঋতুতেই এমনই ভালো থাকে, প্রাণবন্ত থাকে।
আড়িয়াল বিলের পাশে অবস্থিত বিক্রমপুরের ভাগ্যকূল এর বিখ্যাত জমিদার যদুনাথ রায়ের বাড়ি। যেটিকে ডাঃ হুমায়ুন আজাদ নাম দিয়েছিলেন
"বিলের ধারে প্যারিস শহর"
————————^^^^^^^^^^————————
মুন্সীগঞ্জে গড়ে উঠছে বিশ্ব মানে জাদুঘর ,স্টেডিয়াম ও সিঙ্গাপুরের আদলে ভিলেজ
বর্ষন মোহাম্মদঃ মুন্সীগঞ্জে গড়ে উঠছে বিশ্ব মানে জাদুঘর ,স্টেডিয়াম ও সিঙ্গাপুরের আদলে অলেম্পিক ভিলেজ । সাথে সাথে এগিয়ে চলছে দেশের অন্যতম মেগা প্রকল্প পদ্মা বহুমুখী সেতুর নির্মাণকাজ ।। এ যাবৎ মূল কাজের প্রায় ৪১ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে।
পদ্মা সেতুর ৩৭তম গ্রুপ পাইলের কাজ শেষ হয়েছে। এরপর পাইলের ওপর মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে পিলার। একটি পিলার থেকে আরেকটি পিলারের ওপর বসবে সুপারস্ট্রাকচার; তারপরই বাস্তবে দৃশ্যমান হতে যাচ্ছে পদ্মা সেতুর মূল অবকাঠামো। পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের প্রজেক্ট ম্যানেজার ও নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আবদুল কাদের গতকাল দুপুরে মুঠোফোনে এসব তথ্য জানিয়ে বলেন, ৬টি গ্রুপ পাইলের ওপর দাঁড়াবে একটি পিলার। ৩৭তম গ্রুপ পাইলের কাজ সম্পন্ন হয়ে গেছে। যার ওপর পিলার স্থাপন করা হবে। আর ওই পিলারের ওপর পদ্মা সেতুর মূল অবকাঠামো গড়ে উঠবে। গড়ে উঠবে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। ইতিমধ্যে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর টোল প্লাজার শতভাগ কাজ সম্পন্ন হয়ে গেছে। মাওয়াস্থ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে চলছে স্প্যান ও গার্ডার সংযোজনের কাজ। ২০১৮ সালের মধ্যে পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। ২৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে পদ্মা সেতু। মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মাওয়া ও শরীয়তপুরের জাজিরা পয়েন্টের মধ্যে মেলবন্ধন গড়ে তুলবে অনেক আকাঙ্ক্ষার পদ্মা সেতু। প্রমত্তা পদ্মার বুকে বাংলাদেশের অহংকার হিসেবে সেতু জেগে উঠতে শুরু করেছে। এটি সত্যিকারেই বাংলাদেশের অহংকার ও গর্বের প্রতীক। কারণ, নিজস্ব অর্থায়নে এত বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের স্বপ্ন এর আগে কোনো দিনই দেখেনি বাংলাদেশ। এমনকি বিদেশিরাও এতদিন এটা ভেবে এসেছে যে, বড় কোনো প্রকল্প বাস্তবায়ন করা বাংলাদেশের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই তারা নানা কায়দা করে নতুন নতুন শর্ত জুড়ে দিয়েছে ঋণ দিতে গিয়ে। একপর্যায়ে পদ্মা সেতুতে ঋণ দিতে গিয়ে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে শেষ পর্যন্ত ঋণ বাতিল করে বিশ্বব্যাংক। শুধু ঋণ প্রদানের সিদ্ধান্ত বাতিল করেই তারা থামেনি, দুর্নীতির কলঙ্কও দিয়েছে। যদিও বিশ্বব্যাংকের ওই আচরণে দমে যায়নি বাংলাদেশ। বরং কারও ওপর ভরসা না করে নিজস্ব অর্থায়নেই শুরু করেছে নির্মাণকাজ। পদ্মার বুকে এখন সেতুর স্ট্রাকচার দৃশ্যমান। দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে নির্মাণকাজ। স্বপ্নের এ সেতুর সুপারস্ট্রাকচারের দুটি স্প্যান পুরোপুরি প্রস্তুত। এগুলোর ভরসক্ষমতা যাচাই সম্পন্ন হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যেই স্প্যান দুটি বসানো হবে পিলারের ওপর। আর তখনই দৃশ্যমান হবে পদ্মা সেতুর একাংশ। প্রমত্তা পদ্মার বুকে জেগে উঠবে পদ্মা সেতু নামের বাংলাদেশের অহংকার। বেশ কয়েক দিন আগেই উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন একটি ভাসমান ক্রেন চীনের জোহাও থেকে এসেছে মাওয়ায়। এ ক্রেন দিয়েই পদ্মা সেতুর সুপারস্ট্রাকচার স্থাপনের কাজ করা হবে। পদ্মা সেতুর ১৫০ মিটার দীর্ঘ সুপারস্ট্রাকচারগুলো সরাসরি পিলারে বসাতে হবে, যার একেকটির ওজন প্রায় ২ হাজার ৯০০ টন। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, নদীশাসন, সার্ভিস এরিয়া টু, অ্যাপ্রোচ রোড মাওয়া প্রান্তে ও জাজিরা প্রান্তে কাজের অগ্রগতি সন্তোষজনক। অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের নদীশাসনের কাজ চালাচ্ছে চীনের সিনোহাইড্রো করপোরেশন লি.। মূল সেতুর নির্মাণকাজ করছে চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি। সেতুর দুই পাড়ে সংযোগ সড়ক, টোল প্লাজা ও অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণের জন্য যৌথভাবে আবদুল মোনেম লি. ও মালয়েশিয়ার হাইওয়ে কনস্ট্রাকশন ম্যানেজমেন্ট কাজ করছে। এ ছাড়া পদ্মা সেতুর কাজ তদারকির জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার কোরিয়ান এক্সপ্রেসওয়ে ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে। সবকিছু মিলে প্রমত্তা পদ্মার বুকে বাংলাদেশের অহংকার হিসেবে জেগে উঠতে শুরু করেছে পদ্মা সেতুর পিলারের ওপর সুপারস্ট্রাকচার। নিজস্ব অর্থায়নে এত বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২৩ জেলার মানুষের মাঝে আশার আলো ফুটে উঠেছে। পদ্মাপাড়ের মানুষের মাঝে উৎসবের আমেজ বইছে।
————————^^^^^^^^^^————————
সারা বাংলাদেশে শীর্ষে মুন্সিগঞ্জ; পাশের হার ৯৯দশমিক ৯২শতাংশ
প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষায় সকল জেলার মধ্যে পাসের হারের দিক থেকে মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রথম হয়েছে। পাসের হার ৯৯ দশমিক ৯২।
গতকাল বৃহস্পতিবার এ ফল প্রকাশিত হয়।
জানতে চাইলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পঞ্চানন বালা প্রথম আলোকে বলেন, এবার পিইসি পরীক্ষায় মুন্সিগঞ্জ জেলা থেকে মোট ২৭ হাজার ৭১৮ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এদের মধ্যে ২৭ হাজার ৬৯৫ জন শিক্ষার্থী কৃতকার্য হয়। এর মধ্যে ৩ হাজার ৫৫০ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। পাসের হার ৯৯ দশমিক ৯২। এদিকে এ জেলায় ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় ১০ হাজার ২৮৮ শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে ১০ হাজার ২৫২ শিক্ষার্থী কৃতকার্য হয়েছে। পাসের হার ৯৭ দশমিক ২।
জেলার মোট ছয়টি উপজেলা থেকে পিইসি ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় মোট ৩৮ হাজার ৬ শিক্ষার্থী নেয়।
ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় গজারিয়া উপজেলা থেকে ১৩ জন, সিরাজদিখানে নয়জন, টঙ্গিবাড়ী দুজন, লৌহজংয়ে তিনজন, শ্রীনগর দুজন ও সদর উপজেলা থেকে পাঁচজনসহ ৩৪ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে।
পিইসিতে সিরাজদিখান উপজেলায় ১ হাজার ৫৫ জন, শ্রীনগরে ৭ ৫১ জন, সদরের ৬৪০, টঙ্গিবাড়ীতে ৪২০, লৌহজংয়ে ৩৯৬ এবং গজারিয়া উপজেলায় ২৮৮ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে।
জেলা প্রশাসক সায়লা ফারজানা বলেন, সব বিদ্যালয়ই ভালো ফলাফল করেছে। এই ফলাফল ধরে রেখে আরও ভালো করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
প্রথম আলো
————————^^^^^^^^^^————————
মুন্সীগঞ্জের গর্বঃ স্মৃতিসৌধের স্থপতি সৈয়দ মাইনুল ইসলাম
মাহবুব আলম জয় : মুন্সীগঞ্জ তথা বিক্রমপুর ইতিহাসের কালের স্বাক্ষী।এই জেলায় জন্ম গ্রহণ করেছেন অসংখ্য গুনীজন। জাতীয় স্মৃতিসৌধের স্থপতি মাইনুল ইসলাম ১৯৫২ সালের ৫ মে ​মুন্সীগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ি উপজেলার দামপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা মুজিবুল হক ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজে ইতিহাস পড়াতেন।
জাতীয় স্মৃতিসৌধের এ স্থপতি ১৯৭০ সালে ভর্তি হন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্যবিদ্যা বিভাগে। ১৯৭৬ সালে তিনি প্রথম শ্রেণীতে স্থাপত্যবিদ্যায় স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।
১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ সরকারের গণপূর্ত বিভাগ মুক্তিযুদ্ধের ত্রিশ লাখ শহীদের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধ নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করে। এরপর নকশা আহবান করা হয়। তখন ২৬ বছরের তরুণ স্থপতি মাইনুল ইসলাম স্মৃতিসৌধের নকশা জমা দেন। প্রায় ১৭-১৮ জন প্রতিযোগীর ৫৭টি নকশার মধ্যে তাঁর প্রণীত নকশা গৃহীত হয় এবং তাঁর করা নকশা অনুসারেই ঢাকার অদূরে সাভারে নির্মিত হয় জাতীয় স্মৃতিসৌধ।
জাতীয় স্মৃতিসৌধে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সাতটি ধাপকে সাতটি সরল রেখায় নির্মাণ করেছেন। সাতটি সমদ্বিবাহু ত্রিভুজাকৃতির স্তম্ভের সমন্বয়ে নির্মিত জাতীয় স্মৃতিসৌধ। এটি ১৫০ ফটু উঁচু। সাতটি স্তম্ভ বাঙালির মুক্তিসংগ্রামের সাতটি পর্যায়ের প্রতীক হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। পর্যায়গুলো হলো ১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৫৬-এর শাসনতন্ত্র আন্দোলন, ১৯৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান ও ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ। আরো গভীরভাবে চিন্তা করলে তাঁর সামগ্রিক অনুভবের জায়গাটিও পরস্ফুিটিত হয়।
‘জাতীয় স্মৃতিসৌধে সাতটা খাঁজ সমন্ধে তিনি বলেছিলেন, ‘বায়ান্ন থেকে একাত্তর পর্যন্ত সাতটা বড় আন্দোলন হয়েছিল। সবচেয়ে নিচের খাঁজটা বায়ান্ন, সবচেয়ে উঁচুটা একাত্তর…।’
এই বিখ্যাত স্থপতি ২০১৪ সালের ১০ নভেম্বর না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় লেখা হয়েছিল স্মৃতি সৌধ নির্মাণের পর কে বা কারা তাকে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়েছিল। তিনি তার অসামান্য নিপুন ও দক্ষতায় বাঙালী জাতিকে আরো আলোকিত করেছেন। অর্জন করেছিলেন একুশে পদক। বাঙালী জাতির এই সূর্য সন্তান সৈয়দ মাইনুল ইসলাম তার মহৎ কর্মে বেঁচে রবেন মানুষের হৃদয়ে।
————————^^^^^^^^^^————————
মুন্সীগঞ্জে আলু রোপনে ব্যস্ত কৃষকরা
শুভ রায়ঃ দেশের বৃহত্তম আলু উৎপাদনকারী অঞ্চল মুন্সীগঞ্জের গোটা জনপদ এখন কর্মচঞ্চল। এ জেলার প্রধান অর্থকরী ফসল আলু। জেলার ছয় উপজেলার দিগন্ত বিস্তৃত ক্ষেত জুড়ে এখন চলছে শুধু আলুর আবাদ। কৃষকরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। বাড়িতে নারীরাও বীজ আলু কাটার কাজে ব্যস্ত। আগামী এক মাস ধরে চলবে আলুর আবাদ। গত দুই মৌসুমে আলুর ভালো ফলন ও আলু চাষে লাভবান হওয়ায় মুন্সীগঞ্জের কৃষকরা এবার বেশ উদ্দীপনা ও উৎসাহ নিয়ে আলু চাষ করছেন।
এখন জেলার ৬টি উপজেলার ৩৮ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে পুরোদমে আলু চাষ শুরু হয়েছে। আগামী এক মাস ধরে এ আলুর আবাদ চলবে। আলু উত্তোলন শুরু হবে আগামী ফেব্রুয়ারী মার্চ মাসে। আলু রোপণের পর তা পরিপূর্ণ হয়ে উঠতে সময় লাগে তিনমাস। আলু আবাদে জেলার কৃষকদের সহায়তা করছেন বাড়ির নারীরাও। তারা বীজ আলু কেটে দিচ্ছেন। কাটার পর শ্রমিকরা তা জমিতে নিয়ে রোপণ করছেন। বর্তমানে বাজারে আলুর চড়া দাম। বীজ আলু কাটার পর অবশিষ্ট কাটা আলু ব্যবসায়ীরা বাড়িতে গিয়েই ১৭-১৮ টাকা কেজি দরে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। আলুর দাম বেশি হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে।
মুন্সীগঞ্জে দিনদিন কৃষকের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। সঙ্গে কমছে শ্রমিকের সংখ্যাও। গ্রামের অনেক কৃষক পরিবারের একাধিক সদস্য প্রবাসী হচ্ছেন। অনেকের আর্থিক অনটন না থাকায় চাষাবাদ ছেড়ে দিয়ে জমি লগ্নি বা ভাড়া দিচ্ছেন। আবার কেউ কেউ টাকা লগ্নি খাটাচ্ছেন। এ অবস্থায় গত কয়েক বছর ধরে রংপুর, গাইবান্ধা, নীলফামারী, ময়মনসিংহ, দিনাজপুরসহ উত্তরবঙ্গের শ্রমিকরা মুন্সীগঞ্জে ছুটে আসছেন আলু আবাদে। বর্তমানে মুন্সীগঞ্জ জেলার জমিতে উত্তরবঙ্গের ৯ থেকে ১০ হাজার শ্রমিক আলুচাষে নিয়োজিত রয়েছেন। আর এখানকার সচ্ছল কৃষকরা ওই শ্রমিকদের জমি চুক্তি দিয়ে আলু চাষাবাদ করছেন। আলু চাষকে ঘিরে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের সব পুঁজিও যাচ্ছে মাটির নিচে অর্থাৎ আলুর জমিতে। আলু চাষাবাদ মৌসুমে জেলার সব ধরনের ব্যবসায় মন্দাভাব দেখা দেয়। কৃষক সামাজিক বিয়ে বন্ধন থেকে বিরত থাকেন। মার্চ মাসে আলুর উঠার পর ব্যবসা-বাণিজ্য, বিয়ে-সাদিসহ সবকিছুই আবার স্বাভাবিক হয়ে উঠে। আসবেন।
————————^^^^^^^^^^————————

Post a Comment

0 Comments